Department of Sundarban Affairs

Department of Sundarban Affairs

সুন্দরবন ভ্রমণ

Home > বাংলা > সুন্দরবন ভ্রমণ

sundarban_bhroman
sundarban_bhroman
sundarban_bhroman

ভ্রমণ

পশ্চিমবঙ্গের সর্বদক্ষিণে বঙ্গোপাসাগরের কোল ঘেষে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা৷ একদিকে হলদিয়া থেকে নদী পেরিয়ে ঢুকে পড়া যায় ডায়মন্ড হারবারে৷ আবার মেদিনীপুরের রসুলপুর থেকে নদী পথ ধরেই দুই আড়াই ঘন্টার পথ পেরিয়ে অনায়াসে চলে আসা যায় জেলার একবারে দক্ষিণ-পশ্চিমে গঙ্গা আর বঙ্গোপসাগরের মোহনায় সাগরদ্বীপে বা গঙ্গাসাগরে৷

গঙ্গাসাগর

বঙ্গোপসাগরের মোহনায় জেলার দক্ষিণ-পশ্চিম অংশের শেষ ভূ-খন্ড সুপরিচিত ও সুবিস্তৃত সাগর ব-দ্বীপ৷ এখানে প্রতি বছর মকরে বা পৌষসংক্রান্তিতে কপিলমুনির মেলা ও পুন্যস্নান উপলক্ষে চার-পাঁচ লক্ষ মানুষের সমাবেশ হয়৷ প্রবাদ আছে এই তিথিতে সঙ্গম স্নান করলে পুন্যস্নানে পাপস্খলন ও স্বর্গলাভের পথ সুগম হয়৷ পুন্যস্নান উপলক্ষে মেলা বসে জানুয়ারি ১৪ তারিখ থেকে৷ মেলা উপলক্ষ্যে কলকাতা থেকে অসংখ্য বাস পুন্যার্থীদের নিয়ে ছুটে যায় হারউড পয়েন্টের দিকে৷ রাজ্যের বৃহত্তম ও প্রাচীনতম মেলা এটি৷ সাগর দ্বীপে কপিলমুনির আশ্রমে বা সঙ্গমে পৌঁছাতে হারউড পয়েন্ট থেকে লঞ্চে কচুবেড়িয়া গিয়ে সেখান থেকে বাসে বা ট্রেকারে অথবা প্রায় ৩০ কিঃমিঃ পথ পাড়ি দিতে হয়৷ ট্রেনে নামখানা স্টেশনে নেমে ভ্যান রিক্সা করে হারউড পয়েন্টে পৌছানো যায়৷
কোলকাতা থেকে নামখানা বাসে বা ট্রেনে গিয়ে লঞ্চে পেরিয়ে পৌছে যাওয়া যায় চেমাগুড়ি৷ সেখান থেকে মাত্র ৮ কিঃমিঃ রাস্তা গেলে সঙ্গম স্থল৷ তবে মেলার সময় ছাড়া এই পথে ঠিকমত লঞ্চ চলে না৷ আর অন্যান্য সময় লঞ্চ চালু থাকলেও মেদিনীপুর জেলার রসুলপুর থেকে আসা লঞ্চ মেলা চলাকালীন বন্ধ থাকে৷ ফলে সেই সময় কোলকাতা হয়েই সাগরে যেতে হয়৷
শুধু মাত্র পুন্যস্নানই নয়, অন্যান্য সময়ে ধূ-ধূ বিস্তৃত সাগর বেলা, একদিকে মুড়িগঙ্গা ও অন্যদিকে বঙ্গোপসাগরের উপস্থিতি, লাল কাঁকড়ার অবাধ বিচরণে নকসা কাটা বালুতট পযটকদের কাছে অত্যন্ত আকর্ষণের৷ তাই শুধু মেলার সময়েই নয়, সারা বছর ধরেই পর্যটকরা এখানে আসেন৷ তাঁদের থাকার জন্য রয়েছে ভারত সেবাশ্রম সংঘের আশ্রম, জেলা পরিষদের বাংলো, পঞ্চায়েতের বাংলো এবং ছোট বড় নানান হোটেল৷

সুন্দরবন

দঃ ২৪ পরগনার পর্যটনস্থল বলতে সাগরদ্বীপের পরেই আসে পৃথিবীর বৃহত্তম বনভূমি আবৃত ব-দ্বীপ অঞ্চল সুন্দরবন৷ সুন্দরী, গরান, গর্জন, গেওয়া-র ছায়ায় ঘেরা গা-ছমছমে বনবিবি আর দক্ষিণ রায়ের আবাস৷ মনোরম পরিবেশে নানা রকম পাখি, হরিণ, কচ্ছপ, বুনোশুয়োর, গোসাপের সঙ্গে রয়েছে জলের কুমীর আর ডাঙ্গার বাঘ৷
কোলকাতা থেকে ক্যানিং, সোনাখালি হয়ে অথবা কৈখালি থেকে ঢুকে পড়া যাবে এই জঙ্গলে৷ পঃবঃ পর্যটন দপ্তর ছাড়াও দঃ ২৪ পরগনা বনদপ্তর (২৪৭৯ ৯০৩২)। যথাযথ প্রবেশের অনুমতি সংগ্রহ করে যেতে হয় এই বনভূমি অঞ্চলে। এ ছাড়া অনেক বেসরকারী ভ্রমন প্রতিষ্ঠান ও এই ভ্রমন পরিচালনা করে থাকে।

ক্যানিং মহকুমার দর্শনীয় স্থান

ঘুটিয়ারী শরীফ ক্যানিং - এখানে আছে পীর মোবারক গাজীর (বড়খাঁ গাজী) দরগা ও মসজিদ৷ মুসলমানদের তীর্থক্ষেত্র৷ প্রতি বছর ৭ই আষাঢ় থেকে শুরু হয় গাজীর তিরোধান দিবস৷ সঙ্গে মেলাও বসে৷ এখানে হিন্দু মুসলমান উভয় সম্প্রদায়ের মানুষ যোগদান করেন৷

পুরাতন গীর্জা-বাসন্তী - ক্যানিং থেকে নৌকায় বা মটর লঞ্চে গোসাবা হয়ে যাওয়া যায়৷ এখানে ভরতগড় স্থানটি প্রাচীন৷ বাসন্তীচার্চ এখানকার দর্শনীয় স্থান৷

হ্যামিলটনের বাংলো গোসাবা - স্যার ড্যানিয়েল ম্যাকিনন হ্যামিলটন সুন্দরবন অঞ্চলে চাষাবাদ প্রবর্তনের জন্য একটি কৃষি উপনিবেশ প্রতিষ্ঠা করেন গোসাবায়৷ এখানে তার বাংলোটি দর্শকদের আকর্ষণের বস্তু৷ কাঠের তৈরী এই বাংলোর আকর্ষণে দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসেন ঐতিহাসিক ও অন্যান্য পর্যটকরা৷ একটি ঐতিহাসিক গ্রন্থের গ্রন্থাগারও এখানে স্থাপিত হয়েছে৷

হ্যালিডে দ্বীপ - বঙ্গোপাসোগর ও মাতলা নদীর সঙ্গমে অবস্থিত এই দ্বীপটিতে রয়াল বেঙ্গল টাইগার এবং পাখি দেখা যায়৷ আলিপুর D.F.O. অফিসের অনুমতি নিয়ে ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারির মধ্যে এখানে যাওয়া যায়৷

সজনেখালি - সুন্দরবনের গভীরে অরণ্য দেখতে আগ্রহী মানুষ কলকাতা থেকে বাসে বা ট্রেনে সোজা চলে যেতে পারে বাসন্তীর সোনাখালি বা গদখালি৷ সেখান থেকে লঞ্চে চেপে ঢুকে পড়া যায়৷ সুন্দরবনের ভয়াল ভীষণ অরণ্যে৷ সজনেখালি বার্ডস্যাংচুয়ারি একটি দর্শনীয় স্থান৷ সুন্দরবন টাইগার রিজার্ভ প্রজেক্টের অন্তর্ভুক্ত এই বার্ড স্যাংচুয়ারি৷ দক্ষিনে হ্যালিডে দ্বীপ৷ এখানকার হেতাল বন রয়েল বেঙ্গল টাইগারের প্রিয় বাসস্থান৷ হাঁস, পানকৌড়ি, ঈগল, শঙ্খচিল প্রভৃতি পাখির বাস এখানে৷ তবে থাকলে ওয়াচ টাওয়ারে বসে হরিণ, বানরের সঙ্গে বাঘের দেখা মেলাও আশ্চর্যের নয়৷

বাস্তুতান্ত্রিক সংগ্রহশালা

১. টাইগার প্রজেক্ট সংগ্রহশালা - ক্যানিং
২. সুন্দরবন প্রজেক্ট সংগ্রহশালা - সজনেখালি


কাকদ্বীপ মহকুমার দর্শনীয় স্থান

বকখালি - নামখানা পর্যন্ত ট্রেনে গিয়ে সেখান থেকে অথবা কলকাতা থেকে সরাসরি বাসে পৌঁছে যাওয়া যায় বকখালি সমুদ্র সৈকতে৷ যাওয়ার পথে বাস সমেত লঞ্চে উঠে হাতানিয়া-দোয়ানিয়া নদী পেরোনোর অভিজ্ঞতা সত্যি সত্যি রোমাঞ্চকর৷ এখানকার সমুদ্র সৈকত, ম্যানগ্রোভ বন, উন্মুক্ত চিরিয়াখানা পর্যটকদের কাছে অত্যন্ত আকর্ষণের৷

ফ্রেজারগঞ্জ - নামখানা থেকে বকখালি হয়ে ফ্রেজারগঞ্জ ঘুরে আসার আকাঙ্খা অনেক পর্যটকেরই হৃদয়ের আকর্ষণ৷ বাংলার গভর্নর স্যার এন্ডুফ্রেজার সাহেবের নামে৷ এখানে একটি মৎস্য বন্দর আছে৷ এছাড়া নৌকায় করে সমুদ্র মোহনায় ঘুরে আসাও খুবই আকর্ষণের ব্যাপার৷

গঙ্গাসাগর - সুন্দরবনের পশ্চিমাংশে অবস্থিত সাগর দ্বীপ ছিল ৫টি দ্বীপের সমষ্টি৷ পাঁচটি দ্বীপ হল সাগর, ঘোড়ামারা, সুপারীডাঙ্গা, আগুনমারী ও লোহাচড়া৷ বতর্মানে মাত্র দুটি দ্বীপ অবশিষ্ট সাগর ও ঘোড়ামারা। এখানে হুগলী নদী বঙ্গোপাসাগরে মিশেছে৷ এই সঙ্গমে প্রতিবছর পৌষ-সংক্রান্তির দিনে ১৪ই জানুযারী কপিল মুনির মন্দিরে সারা ভারতবর্ষের লক্ষ লক্ষ পূনার্থী সাগর সঙ্গমে পূন্যস্নান করে, পূজা দেন এখানে পাপমুক্তি ও পরিবারের শান্তি কামনা করেন৷ এছাড়া ভারত সেবাশ্রম সংঘের ব্যবস্থাও আছে৷ হোটেল, যুবআবাস, ধমর্শালা প্রভৃতিতে পর্যটকরা অবস্থান করতে পারেন৷

পাঁকুড়তলা - এই স্থানটিতে প্রত্নসম্পদ সমৃদ্ধ দুটি বিশাল ঢিবি থেকে প্রচুর নিদর্শন পাওয়া গেছে৷ নানারকম মুদ্রা, পোড়ামাটির পুতুল, পশুপাখি, নানারকম পাত্র, শিলমোহর, ছাচ্, গনেশ ও বিষ্ণুমূর্তি ও শিবলিঙ্গ আছে এখানে৷

শিবকালী নগর - এখানকার বিশালাক্ষী ও ইশানেশ্বর শিবমন্দির বিখ্যাত দক্ষিনমুখী মন্দিরের গর্ভগৃহে ৩ ফুট উচ্চতার পিতলের চতুর্ভূজ দেবীমূর্তি বিরাজ করছে৷ দেবীর মূখমন্ডল অষ্টধাতু নির্মিত৷ শিবরাত্রি ও গাজন উৎসবে আসে স্থানীয় ধর্মপিপাসু মানুষ ও বহু সন্ন্যাসী৷

Copyright © 2018. This Website belongs to Department of Sundarban Affairs, State Government of West Bengal | All Right Reserved | Disclaimer | Powered By WTL

scroll top